টাকায় মসজিদের ছবি থাকলে, মন্দিরের ছবি থাকতে পারবে না কেন?

June 5, 2025

টাকায় মসজিদের ছবি থাকলে, মন্দিরের ছবি থাকতে পারবে না কেন?

প্রশ্নটা অনেক যৌক্তিক, কারণ বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র, এখানে সব ধর্মের মানুষ বসবাস করে। তাই সব ধর্মীয় স্থাপনার সম্মানও রাষ্ট্রীয়ভাবে দেওয়া উচিৎ।

কিন্তু প্রশ্নটা উঠছে তখন, যখন ২০ টাকার নোটে আগে ছিল ‘ষাট গম্বুজ মসজিদ’ সেই জায়গাতেই এখন দেওয়া হয়েছে ‘কান্তজীর মন্দির। প্রশ্ন হলো” মসজিদের জায়গাতেই কেন মন্দির দেওয়া হলো?
৫০ টাকার নোটে অন্য কিছু ছিল, সেখানে কেন দেয়া হলো না? বা একদম নতুন কোনো নোটে কেন নয়? এমনকি ১০০, ৫০০ টাকাতেও তো দেওয়া যেতে পারত।

এই জায়গায় মুসলিম সমাজের একটা স্বাভাবিক কৌতূহল হচ্ছে, এমনকি ক্ষোভও দেখা দিচ্ছে, কারণ তারা এটিকে প্রতিস্থাপন’ হিসেবে দেখছে, ‘সহাবস্থান’ হিসেবে নয়। আমাদের প্রতিবেশী দেশে (ভারতে) মসজিদ ভেঙে মন্দির বানানোর অনেক দৃষ্টান্ত দেখেছি। তাই বাংলাদেশের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় এমন কাজ যদি ইচ্ছাকৃত হয়, অর্থাৎ ২০ টাকার নোটে ষাট গম্বুজ মসজিদ সরিয়ে যদি মন্দিরের ছবি দেওয়া হয়, তবে সেটা ইসলাম ধর্মের অনুভুতির উপর আঘাত আনা হবে এবং দেশে বিশাল সংকট তৈরি হবে।

আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির গড়ছে, সেখানে মুসলমানদের সংখ্যা কম, স্বণাতন ধর্ম বা অন্যান্য ধর্ম বেশি, এক কথায় মুসলমানেরা সংখ্যালগু, তাই তারা যেটা খুশি সেটা করতে পারছে এবং মুসলমানরা প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হচ্ছে না, তবে তার সু-বিচার আল্লাহ ধীরে ধীরেই করছে, কারণ ইসলাম ধর্মের অনুভুতির উপর আঘাত করলে আল্লাহ কোনোদিন সহ্য করবে না, এর একটাই কারণ আল্লাহ মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে মুসলিম করে এবং একমাত্র শ্রেষ্ঠ ধর্মই ইসলাম। আর মানুষ পৃথিবীতে আসার পরে পছন্দ মত নিজেদের মা বাবাদের অনুস্মরণ করে ধর্ম বেছে নিয়েছে।

এখানে একটা প্রশ্ন জাগে! এটা কি নিছক নোটের ডিজাইন পরিবর্তন? নাকি মুসলিম জনসাধারণকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা? নাকি পরিকল্পিত কোনো প্ররোচনা?
এই প্রশ্নগুলো নিঃসন্দেহে খতিয়ে দেখা দরকার, কারণ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা, এখানে নিছক আবেগ নয়, বরং জনগণের অন্তরের গভীরে গাঁথা বিশ্বাস।
আমরা চাই শান্তি, সহাবস্থান, সম্মান —
কিন্তু সম্মানের নামে এক পক্ষের জায়গা দখল করে আরেক পক্ষকে দিলে সেটা সম্মান নয়, বরং বিভাজনের সৃষ্টি হবে।

আমাদের দেশ ধর্মনিরপেক্ষ, এখানে সব ধর্ম জাতি বর্ণভেদে বসবাস করে। আমরা চাই শান্তি, তাই ২০ টাকার নোটে যে ষাট গম্বুজ মসজিদ ছিল, সেটা বহাল রেখে অন্য যে সব নোটে কিছু নাই বা নতুন কোন নোট তৈরী করে সেখানে মন্দিরের ছবি দিয়ে দেশে অশান্তি না বাড়িয়ে সব ধর্ম যাতে মিলে মিশে শান্তিতে বসবাস করতে পারে তার সু-ব্যাবস্থা করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

মুহা, মোশাররফ হোসেন।
কবি, সাহিত্যিক, কলামিস্ট ও প্রাণের মেলা জাতীয় কবি পরিষদের সভাপতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *